হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ও ইসলামী ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল (সোমবার) ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী একদল বিশিষ্ট সুন্নি আলেম ও বিজ্ঞ ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সাক্ষাতকালে বলেন, মনে রাখতে হবে আমরা একই উন্মাহর সদস্য। 'মুসলিম উম্মাহ'- এই বিষয়টিকে কোনভাবেই ভুলে যাওয়া যাবে না। মুসলিম উম্মাহর পরিচিতি রক্ষা করতে হবে। মুসলিম উম্মাহ জাতীয়তা ও ভৌগোলিক সীমানার উর্ধ্বে। মুসলিম উম্মাহ নামক পরিচিতি ও বাস্তবতা পরিবর্তন হবে না।
সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, ইসলামের শত্রুরা মুসলিম উম্মাহ নামক আমাদের একক পরিচয়ের বিষয়ে মুসলমানদেরকে উদাসীন করে তোলার চেষ্টা করেছে এবং এখনও এই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটাতো হতে পারে না যে, আমি নিজেকে মুসলিম দাবি করব কিন্তু #মিয়ানমার, গাজা, ভারত বা অন্যান্য স্থানের মুসলমানের কষ্টের বিষয়ে উদাসীন থাকব।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, অকল্যাণকামীদের মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বে বিশেষ করে ইরানে মাজহাবগত বিবাদ উসকে দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে। দুর্বৃত্তরা বুদ্ধিবৃত্তিক, প্রচারণামূলক ও অর্থনৈতিক হাতিয়ার ব্যবহার করে আমাদের দেশ এবং অন্যান্য মুসলিম অঞ্চলে শিয়া- সুন্নির মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতে চাইছে। তারা উভয় পক্ষের লোকদেরকে অপবাদ দিতে বাধ্য করার মাধ্যমে বিদ্বেষ ও বিরোধ উসকে দিচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলার উপায় হলো ঐক্য। ঐক্যের বিষয়টি একটি কৌশল নয় বরং একটি কুরআনের নীতি।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, শিয়া-সুন্নি ঐক্য বিনষ্টের নানা ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও ইরানের সুন্নিরা বিদ্বেষপূর্ণ লক্ষ্য-উদ্দেশ্য মোকাবেলা করেছে। এর প্রমাণ হলো পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধে ১৫ হাজার সুন্নি শহীদ হয়েছেন। বিপ্লব এবং ন্যায়ের পথে সংগ্রাম করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন আরও বিপুল সংখ্যক সুন্নি আলেম।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরে আরও বলেন, একমাত্র ঐক্যের মাধ্যমেই মুসলিম উম্মাহর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা সম্ভব। বর্তমানে গাজা তথা ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষকে সমর্থন করা একটি স্পষ্ট ফরজ দায়িত্ব এবং কেউ যদি এই দায়িত্ব পালন না করে তাহলে তাকে অবশ্যই আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)'র পবিত্র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১২ থেকে ১৭ রবিউল আউয়াল ইসলামী ঐক্য সপ্তাহ পালিত হয়। এ উপলক্ষে ইসলামী ঐক্য সম্মেলন আয়োজনের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।